পৃথিবীর সাথে ঘুরব || Rotating with the world
আমরা সবাই কমবেশি উপগ্রহ শব্দটা শুনেছি। যে সব বস্তু কোন গ্রহকে কেন্দ্র করে ঘুরে, তাদেরকে উপগ্রহ বলা হয়ে থাকে। যেমন: চাঁদ একটি স্বাভাবিক উপগ্রহ। স্বাভাবিক উপগ্রহ বলতে আসলে বুঝানো হয়ে থাকে যে উপগ্রহ প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট।
তবে আজকে আমাদের আলোচনা হবে কৃত্রিম উপগ্রহ(satellite) নিয়ে। তবে এই চিন্তা মানুষের মাথায় কিভাবে এলো?
মানুষ যখন জানতে পারল, চাঁদ ৩০ দিনে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করছে। ঠিক তখনই মানুষের মাথায় আসলো , কি করে চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে?
এ প্রশ্নের উত্তর মিলল যখন আমরা জানতে পারলাম, অভিকর্ষের ( gravity) দরুন চাঁদের উপর পৃথিবীর কেন্দ্রমুখী বল( Centripetal Force) ই এর কারণ। পৃথিবীর চারদিকে চাঁদের প্রদক্ষিণের ফলে সৃষ্ট কেন্দ্রমুখী বল পৃথিবী থেকে প্রযুক্ত কেন্দ্রমুখী বলের সমান ও বিপরীত হওয়ায় চাদ সোজা না গিয়ে পৃথিবীর চারদিকে বৃত্তাকার পথে ঘুরতে থাকে।
ঠিক এই তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে মানুষ মহাশূন্যে পাড়ি দেয়ার জন্যে কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরী করে।কৃত্রিম উপগ্রহ পৃথিবী থেকে নিৰ্দিষ্ট উচ্চতায় নিজ নিজ কক্ষপথে থেকে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে।
তিন স্তরবিশিষ্ট রকেটের সাহায্যে কৃত্রিম উপগ্রহকে নিৰ্দিষ্ট উচ্চতায় তুলে পরে ভূ-পৃষ্টের সমান্তরালে একটা নিৰ্দিষ্ট বেগে ছেড়ে দেয়া হয়। তখন এটি পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে থাকে।১৯৫৭ সালে ৪ঠা অক্টোবর সর্বপ্রথম মহাশূন্যে কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণ করা হয়। উপগ্রহকে বসানো হয় রকেটের নাকের ডগায় আর অন্য যন্ত্রপাতি ও জ্বালানি থাকে রকেটের ভিতর।বায়ুর বাধা যাতে এর গতিকে বাধা দিতে না পারে তার জন্য প্রায় ৯৩০ কিলোমিটার উপরে কক্ষপথে স্থাপন করা হয়।
আমরা সাধারণত দেখি রকেট খাড়াভাবে প্রেরণ করা হয়, তবে মনে প্রশ্ন আসতে পারে কিন্তু কেন?
ভূ-পৃষ্টের নিকটে বায়ুমন্ডলের ঘনত্ব ও এর ফলে যে রকেটের গতি বাধাগ্রস্ত হয় তা কাটিয়ে উঠতে ক্ষুদ্রতম পথে তা পেরোনোর জন্যই আসলে এটিকে খাড়াভাবে উপরে ওঠানো হয়।
কৃত্রিম উপগ্রহকে রকেটের সাহায্যে উৎক্ষেপণের পরে নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার মাধ্যমেতা ধীরে ধীরে বাকিয়ে নিৰ্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপন করে ৮.০৫ k/ms থেকে ১১.১ k/ms বেগে ছেড়ে দিলে তা পৃথিবীর কৃত্রিম উপগ্রহ হিসেবে প্রদক্ষিণ করতে থাকবে।
১৯৫৭ সালে রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা যে কৃত্রিম উপগ্রহটিকে প্রেরণ করেন সেটি ছিলো স্পুটনিক-১ এবং ঠিক একই বছরে আর একটি কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণ করেন সেটি ছিল স্পুটনিক- ২। তবে আমেরিকার বিজ্ঞানীরা ১৯৫৮ সালে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণ করে এক্সপ্লোরার-১ নামে। রাশিয়ার বিখ্যাত বিজ্ঞানী ইউরি গ্যাগারিন ভস্টক-১ এ করে সর্বপ্রথম মহাশূন্যে বিচরণ করেন।
তবে এবার কথা হবে ভূ-স্থির উপগ্রহ (Geo-stationary satellite) নিয়ে। এ ভূ-স্থির উপগ্রহ গুলো আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করি। এই যেমন: টেলিফোন ,ইন্টারনেট ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস ইত্যাদি ক্ষেত্রে। এই ভূ-স্থির উপগ্রহ নিজ কক্ষপথে আবর্তনকাল ঘূর্ণায়মান পৃথিবীর আবর্তনকালের সমান মানে ২৪ ঘন্টা হয়ে থাকে।
কৃত্রিম উপগ্রহের বেগ কিভাবে মাপতে পারব আমরা?
ধরে নিই , ভূ-পৃষ্ঠ হতে ভূ-স্থির উপগ্রহের উচ্চতা h, পৃথিবীর ব্যাসার্ধ R
তবে ঐ উপগ্রহের কক্ষপথের উচ্চতা হবে r=R+h ।
আমরা মহাকর্ষীয় সূত্র কমবেশি সবাই জানি,
ধরে নিই , ভূ-পৃষ্ঠ হতে ভূ-স্থির উপগ্রহের উচ্চতা h, পৃথিবীর ব্যাসার্ধ R
তবে ঐ উপগ্রহের কক্ষপথের উচ্চতা হবে r=R+h ।
মহাকর্ষীয় সূত্র |
পৃথিবীর কেন্দ্রমুখী বলের সূত্র,
পৃথিবীর কেন্দ্রমুখী বল |
এ থেকে আমরা উপগ্রহের বেগ v বের করতে পারবো এ দুটোর সম্পর্ক থেকে,
বা,
এখানে, M হলো পৃথিবীর ভর এবং m হলো উপগ্রহের ভর, আর G হলো অভিকর্ষীয় ত্বরণ।
আমরা পৃথিবীর ভর তো জানি M = 6.4 x 10^ 24 kg সাথে অভিকর্ষীয় ত্বরণ G = 9.8 m/s^2
আর পৃথিবীর ব্যাসার্ধ R= 6400 km ।
পৃথিবী থেকে R+h উচ্চতা উপরে হয় তবে সূত্রটি হবে,
এখন যদি ভূ-পৃষ্ঠ হতে উপগ্রহের উচ্চতা h আপনার জানা থাকে, তবে আপনিই
বের করে ফেলতে পারবেন উপগ্রহটি কত বেগে পৃথিবীকে আবর্তন করছে।
এখানে, M হলো পৃথিবীর ভর এবং m হলো উপগ্রহের ভর, আর G হলো অভিকর্ষীয় ত্বরণ।
আমরা পৃথিবীর ভর তো জানি M = 6.4 x 10^ 24 kg সাথে অভিকর্ষীয় ত্বরণ G = 9.8 m/s^2
আর পৃথিবীর ব্যাসার্ধ R= 6400 km ।
পৃথিবী থেকে R+h উচ্চতা উপরে হয় তবে সূত্রটি হবে,
এখন যদি ভূ-পৃষ্ঠ হতে উপগ্রহের উচ্চতা h আপনার জানা থাকে, তবে আপনিই
বের করে ফেলতে পারবেন উপগ্রহটি কত বেগে পৃথিবীকে আবর্তন করছে।