অ্যান্টি-স্যাটেলাইট অস্ত্র (Anti-satellite weapon-ASAT) ।। Anti satellite missile
অ্যান্টি-স্যাটেলাইট অস্ত্র স্পেসে মিলিটারি কাজে ব্যবহার করার জন্য তৈরি করা হয়। যদিও কোন যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অ্যান্টি-স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়নি তবে এখন পর্যন্ত চারটি দেশ(ভারতকে সহ) নিজেদের স্যাটেলাইট ধ্বংস করে এর পরীক্ষা চালিয়েছে। এতে মহাকাশে তাদের যুদ্ধ করার সক্ষমতা তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়েছে দেশগুলো। অ্যান্টি স্যাটেলাইট মিসাইল গুলোকে অ্যান্টি-স্যাটেলাইট অস্ত্র(Anti-satellite weapon-ASAT) বলা হয়ে থাকে।
অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইল শত্রু উপগ্রহের উপর তাদের আক্রমণ করে শত্রুর বিভিন্ন ইন্টিলিজেন্স এজেন্সির মধ্যে যোগাযোগে বাধা সৃষ্টি করে, পাশাপাশি ব্যালিস্টিক মিসাইলগুলি আটকানোর জন্য একটি প্রযুক্তি বেস সরবরাহ করে।
U.S. ASM-135 ASAT missile |
RIM-161 Standard Missile 3 |
বেলড অরিয়নকে (মিসাইল) একটি বোম্বার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় যার মাথায় পারমাণবিক(নিউক্লিয়ার) টিপড যুক্ত ছিল,যেটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছিল। মিসাইলটি বোম্বার থেকে নিক্ষেপণের পর এক্সপ্লোরার 6 উপগ্রহের কাছে যথেষ্ট কাছ দিয়ে চলে যায়, যদি লাগত তবে ধ্বংস হয়ে যেত।
তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নও বসে থাকেনি। তারাও অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইলের পরীক্ষা চালায় ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে। মূলত শত্রুরা যাতে নিজেদের মধ্যে সহজে যোগাযোগ করতে না পারে তাই স্যাটেলাইটকে ধ্বংস করে দেয়াই সেনাবাহিনীর লক্ষ্য।
যে স্যাটেলাইট ধ্বংস করা হবে তা ট্র্যাক করা |
১৯৮৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এফএম-135 পরীক্ষা করেছিল, যা একটি F-15 যোদ্ধা জেট থেকে ছোড়া হয়েছিল। এটি একটি আমেরিকান স্যাটেলাইট সলভিন্ড P78-1 কে ধ্বংস করে। যার পরে প্রায় ২০ বছর আর কোন অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইল পরীক্ষা চালানো হয়নি।
পরবর্তীতে চীন ২০০৭ সালে স্থল ভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে তাদের নিজস্ব উপগ্রহগুলির একটি ধ্বংস করে। এই পরীক্ষাকে সবচেয়ে বিধ্বংসী বলে মনে করা হয়। যেটা স্পেসে প্রচুর পরিমাণে ধ্বংসাবশেষ তৈরি করে ফলে আন্তর্জাতিক সমালোচনার সূত্রপাত করে। যদিও 2007 সালের আগে কোনও দেশ কি পরিমান ধ্বংসাবশেষ উৎপাদন করে তা পরীক্ষা করেনি। ৮০০ কিলোমিটার (৫০০ মাইল) এরও বেশি উচ্চতায় এটি প্রভাব বিস্তার করেছিল, ফলে অনেকগুলি স্ক্র্যাপ(বর্জ্য) কক্ষপথে থাকে। এন্টি-স্যাটেলাইট পরীক্ষা থেকে ধ্বংসাবশেষ অন্য উপগ্রহ এবং মহাকাশযানের মহাকাশযানগুলির জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে, যা রাইফেল বুলেটের চেয়ে জাঙ্ক হুইজের ছোট্ট বিট হিসাবে অনেক বেশি দ্রুত।
আজকে ভারত প্রথমবারের মত অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইল(Anti-satellite missile) উৎক্ষেপণ করে এবং একটি স্যাটেলাইটকে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। ভারতের সামরিক বাহিনী সফলভাবে "মিশন শক্তি" নামে একটি অ্যান্টি-স্যাটেলাইট অস্ত্র প্রদর্শন করে। এই পরীক্ষায় একটি স্থল ভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র যা বিদ্যমান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইন্টারসেপ্টারের একটি সংস্করণ ব্যবহার করা হয়। যেটি প্রায় ৩০০ কিলোমিটার উচ্চতায় উপগ্রহকে আঘাত করে। তবে অবিলম্বে জানা যায়নি, যে কি পরিমান ধ্বংসাবশেষ তৈরি করেছে, তবে কিছু ধ্বংসাবশেষ দীর্ঘতর ক্ষয়ক্ষতির সাথে উচ্চতর কক্ষপথগুলিতে গিয়ে থামতে পারে। কোন স্থান ধ্বংসাবশেষ আছে তা নিশ্চিত করার জন্য নিম্ন বায়ুমন্ডলে পরীক্ষা থাকতে পারে। উৎপন্ন ধ্বংসাবশেষ হ্রাস পেতে সময় লাগবে এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তা পৃথিবীতে ফিরবে।
এধরনেরপরীক্ষা মহাকাশ নিরাপত্তা এবং কক্ষপথের ধ্বংসাবশেষ সম্পর্কে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।